এবার তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত কমে যাচ্ছে কাপ্তাই হ্রদের পানি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পানি আরও কমে যাওয়ায় কাপ্তাই জলবিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। যার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন নেমে এসেছে সর্বনিম্ন পর্যায়ে। এবার শুষ্ক মৌসুম আসার আগেই বিদ্যুৎ উৎপাদন নেমেছে ৩০ মেগাওয়াটে, যেখানে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের সর্বোচ্চ উৎপাদন ক্ষমতা ২৪২ মেগাওয়াট।
হ্রদে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় প্রায় ২১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম উৎপাদন হচ্ছে এই কেন্দ্রে। কম বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রভাব ইতোমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে রাঙামাটি শহরজুড়ে। দিনের বেশিরভাগ সময়েই হচ্ছে লোডশেডিং। এতে ভোগান্তি বেড়েছে সাধারণ মানুষের।
এদিকে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট শুধু বর্ষা মৌসুমেই চালু করা সম্ভব হয় যখন হ্রদে সর্বোচ্চ পরিমাণ পানি থাকে। এছাড়া বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা কমতে থাকে। সচরাচর এপ্রিল মাসের শুরুর দিক থেকে তীব্র দাবদাহের কারণে হ্রদের পানি হ্রাস পেতে থাকে খুব দ্রুত। ফলে হ্রদের পানির ওপর নির্ভরশীল কাপ্তাই জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।
বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদে পানির স্তর রয়েছে ৭৯.৭০ ফিট এমএসএল (মিনস সি লেভেল)। কিন্তু রুলকার্ভ অনুযায়ী বর্তমানে পানি থাকার কথা ৮৮ এমএসএল। প্রায় ৮.৩ ফুট পানি কম থাকার কারণে বাধ্য হয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন কর্তৃপক্ষ পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে চারটি ইউনিট বন্ধ রেখেছে। শুধু ১টি ইউনিট চালু রেখে মাত্র ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। হ্রদে সর্বোচ্চ পানি ধারণক্ষমতা ১০৯ এমএসএল এবং সর্বনিম্ন ৬৮ এমএসএল।
এদিকে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ সূত্র জানায়, কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ২৩০ মেগাওয়াট। কিন্তু ১ ও ২ নম্বর ইউনিটে ৬ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ বেশি উৎপাদন করা যায় বলে মোট সর্বোচ্চ উৎপাদন ক্ষমতা ২৪২ মেগাওয়াট ধরা হয়।
এ বিষয়ে কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের বলেন, বর্তমানে আমাদের একটি ইউনিট চালু আছে। যেটি থেকে আমরা ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছি। ৫টি ইউনিটের মধ্যে ১, ২ ও ৪ নং ইউনিটগুলোই বেশি সচল থাকে। তবে যেকোনো একটি ইউনিট চালু রাখা যায়।